মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০২০
হিলাল ফয়েজী
সংবাদ অনলাইন ডেস্ক
শিরোনাম থেকে আজ ২৪ নভেম্বর ২০২০ তারিখে বিয়োগ একজন। বিয়োজিত বন্ধুটিকে ধরণীর কোন প্রান্তে কোথায় অন্তিম শয়ানে রাখা হবে, সেটা নিয়ে তৎপরতা। একাত্তরের অন্যতম সাহসী, দুর্ধর্ষ গেরিলাযোদ্ধা আমার বন্ধুকে আমাদের রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অতএব সামরিক অভিবাদন হবে কি হবে না, বিউগল অন্তিমে বাজবে কি বাজবে না জানি না। দেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী দৈনিক পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। তবুও বুদ্ধিজীবী সমাধি ক্ষেত্রে শেষ ঠাঁই হবে কিনা এখনও জানি না।
তা জাগতিক এসব প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে বন্ধু মুনীর কখনই মাথা ঘামাতো না। পরিচয় ১৯৬৩ সনের শুরুতে। কাইয়ূম মুকুল আর মুনীরুজ্জামান। একই ব্যাচের সেন্ট গ্রেগরী স্কুলের ছাত্র মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। মুকুল-মুনীর- সেলিম-আমি বলতে গেলে ৫৫-৫৭ বছরের বন্ধুত্ব বজায় রেখে আজও এক সুর বেধেই। আমাদের তিনজনকে একা করে দিয়ে মুনীর একবিংশ শতাব্দীর প্যান্ডেমিকে পার্থিব জীবন হঠাৎ সম্পন্ন করে দিল।
এই প্যান্ডেমিক আমাদের ভোঁতা করে দিয়েছে। ভীতু-সতর্ক করে দিয়েছে। শেষ দেখা বিষয়টি আমাকে তেমন টানে না। জীবনহীনকে নয় জীবন্তের স্মৃতি নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই যতদিন বাঁচি।
জগন্নাথ কলেজের পাশেই কলেজিয়েট স্কুল। হেড মাস্টার টি হোসেনের কড়া অনুশাসনে সেখানে ছাত্র সংগঠন করার এতটুকু উপায় নেই। আমরা আইয়ুবশাহীবিরোধী আন্দোলনের আঁচে উত্তাপিত। কলেজিয়েট স্কুলের নক্ষত্র-ছাত্র কাইয়ূম মুকুলও পারিবারিক উনুনে সে উত্তাপ পেয়েছে।
১৯৬৩ সালের নভেম্বরের কোন এক অপরাহ্ণে পরবর্তীকালের ন্যাপ ও কৃষকনেতা মুহিবুর রহমান ভাইয়ের কাছে মুকুল, মুনীর, সিরাজী ও আমি ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার শপথনামা পাঠ করলাম। সেই হতে শুরু। নক্ষত্র-ছাত্র মুকুল এসএসসিতে দ্বিতীয় হলো। সেলিম অষ্টম। ১৯৬৪ সালের শিক্ষা আন্দোলনে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হেঁটে হেঁটে গমন করে লাঠি-গুলি-টিয়ারগ্যাসের ভুবনে। ১৯৬৫ সালে তমঘা-ই-পাকিস্তান খেতাব পাওয়া অধ্যক্ষ জালালউদ্দিনের ঢাকা কলেজ দুর্গে যারা ফাটল ধরালাম এই চারজন তাদের অগ্রবাহিনী ছিলাম বলা যায়। মুকুলতো কলেজের ছাত্র সংসদ সাধারণ সম্পাদকই নির্বাচিত হয়ে গেল পরোক্ষ নির্বাচনে। যেমন পরোক্ষ তোফায়েল আহমেদ ঊনসত্তরে হয়েছিলেন ডাকসু ভিপি।
১৯৬৫ সালের নভেম্বরে তখনকার সিনিয়র ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মতিউর রহমানের পরিচালনায় তার বংশাল নিবাসে গোপন কমিউনিস্ট পার্টির গ্রুপ সদস্য হলাম। ষাটের দশক তৈরি করেছিল পরের দশকের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি। ১৯৬১ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মণি সিংহের গোপন বৈঠকের সমঝোতায় ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রলীগের যে ঐক্যসূত্র রচিত হলো তাতে মোহাম্মদ ফরহাদ-শেখ মনি-সিরাজুল আলম খান-রাশেদ খান মেনন প্রমুখের মেলবন্ধনে ১৯৬২ থেকে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের যে পবিত্র রক্তধোয়া যাত্রাপথ তৈরি হলো, তাতে একজন সাহসী নিষ্ঠাবান মুনীরুজ্জামানের পদচিহ্ন কখনও ইতিহাসের বুক থেকে মুছে যাবার নয়। ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান কে হবেন, মুনীর ছাড়া আবার কে? প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখবার যে বাহিনী, তার অন্যতম শার্দুল অনিবার্যভাবেই মুনীর। মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিতে ককটেল ইত্যাদি বানাবার আয়োজনে অগ্রণী সেই মুনীর একদিকে নবজাত সাপ্তাহিক একতা পত্রিকায় ১৯৭০ সালে। পাশাপাশি পোস্তগোলার উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক সংগঠক। সার্বক্ষণিক কমিউনিস্ট কর্মী। ওদিকে পার্টির নিরাপত্তা বিন্যাসের বিশ্বস্ত ও সাব্যস্তের এক লড়াকু ব্যক্তিত্ব।
এদিকে আমাদের চমকে দিয়ে সবার আগে বিয়ে করে বসল মুনীর তারই আত্মীয় একজন নব্যচিকিৎসককে। আমরা বরপক্ষ। কনেপক্ষের শ্যালিকাবাহিনী আমাদের ‘কালো সে যে যতো কালোই হোক, ‘যতো ছোটখাটোই হোক,..... বরকে নিয়ে যখন মজা করছিল, আমি বলে উঠলাম, আমাদের বর ‘উগান্ডার রাজেশ খান্না’।
‘উগান্ডার রাজেশ খান্না’ আজ বাংলার মাটিতে সমাহিত হচ্ছেন। উজালা শ্রমিকনেতা একসময় তেজগাঁওয়ে শ্রমিকনেতার দায়ভার পেয়েছিলেন কিছুকালের জন্য। কমিউনিস্ট পার্টি সংগঠনের ধৈর্যশীল কাজ তার কাঁধে অর্পিত হলো। না, কমরেডবৃন্দ কেউ কোন প্রকার নৈতিক স্খলনের জন্য তাকে অভিযুক্ত করতে পারেননি। নেতাকে সবার আগে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখেছে কর্মীরা।
মাটির কাছাকাছি নেতা মুনীর
আমাদের কলেজিয়েট স্কুলে সপ্তম-অষ্টম শ্র্রেণীতেই ইংরেজি উপন্যাস পড়া বিস্ময়বালক মুনীর। পুরোনো ঢাকার ডাকসাঁইটে ‘গুন্ডা’রা তার বন্ধু। এই অফট্র্যাক বন্ধুটিকেই দেখলাম সোভিয়েত কাঠামো ভাঙচুরের পর বাসায় শুয়ে বসে থাকার ‘নব-সার্বক্ষণিকে’ পরিণত হতে। মন মানেনি। বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে বাসা থেকে ‘যায় যায় দিন’ পত্রিকার অফিসের চেয়ারে বসার পেছনে কিঞ্চিৎ ভূমিকা রাখলাম। সম্পাদকের নীতিবিচ্যুতিতে সেখান থেকে পদত্যাগের পর ‘জনকণ্ঠ’ পত্রিকা থেকে তোয়াব ভাই আমার মাধ্যমে মুনীরকে তার পত্রিকায় কর্মনিযুক্তির আহ্বান জানালেন। আকষর্ণীয় প্রস্তাব নিমেষে ফিরিয়ে দিল মুনীর। পরে দৈনিক সংবাদ, যত কমই আয় হোক, যত অনিয়মিত হোক, প্রথম জীবনের প্রকৃত আলো দৈনিক সংবাদ জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ছাড়েনি মুনীর। সম্পাদক হিসেবে যার পরিচিতি খন্দকার মুনীরুজ্জামান। খন্দকার নামটি অন্ধকারেই ছিল। ছাত্র ইউনিয়নে মুনীরের পরিচিতি ছিল ‘ডি মুনীর’। কেন, তা মনে নেই।
আজ সকাল আটটাতেই চ্যানেল থেকে ফোন পেলাম খবর সত্য নাকি! পরশু পর্যন্ত জানতাম মুনীর ভালো হয়ে উঠছে। করোনাকাল শেষে একসঙ্গে কোথায় কোথায় বেড়াব কথা হচ্ছিল। হয়তোবা করোনাকালেই ওর সঙ্গে নতুন ঠিকানায় দেখা হয়ে যাবে আমার।
তখন তাকে বলব, পৃথিবী জেনেছে তুমি সত্যনিষ্ঠ। দৃঢ়চেতা। নীতি বুলেট। অপরূপ সাহসী। বৈষয়িক চটকদারির ফাঁদে না পড়া একজন অসাধারণ সাধারণ মানুষ। তোমার প্রয়াণ সংবাদে বুকের ভিতর অশ্রু ঝরছে তোমার হাজারও সহযোদ্ধা ও গুণমুগ্ধদের।
শিরোনামে ‘আমরা চারজন’। মুনীর তুমি মৃত্তিকালীন হলেও আমরা তিনজন হইনি। আমরা অনেক অনেক চারজন হয়ে পৃথিবী এবং মানবজাতির কল্যাণসাধনায় নিমগ্ন থাকবই।
সংবাদ অনলাইন ডেস্ক
সংবাদ অনলাইন ডেস্ক
সংবাদ অনলাইন ডেস্ক
সংবাদ অনলাইন ডেস্ক
গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাষ্ট্রকে সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা তমা মির্জা ও তার স্বামীর মধ্যে চরম বিরোধ মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক যুগের কথা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও আরটিভির স্টাফ রিপোর্টার সুকান্ত সেন (৪৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে শনিবার ভোর ৬টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
দৈনিক সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দেশের প্রথিতযশা সংবাদিক, বিশিষ্ট কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মুনীরুজ্জামানের মৃত্যুতে শাহজাদপুরে বিভিন্ন মহল শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
সাটুরিয়া দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বরেণ্য সাংবাদিক খন্দকার মুনীরুজ্জানের মৃত্যুতে সংবাদ পরিবার ও
দৈনিক সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামানের মৃতুতে শোক প্রকাশ করেছেন বরগুনা-১ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আ. রহমান নান্টু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল বারি আসলাম, প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জিব দাস,
দৈনিক সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ।
কিশোরগঞ্জ দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামানের মুত্যুতে কশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি
সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামানের মৃত্যুতে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) বাদ জুমা মিলাদ ও বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানুষ মরণশীল তা অবশ্যই মানতে হবে। আমাদের সবাইকে এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে।
খন্দকার মুনীরুজ্জামান ছিলেন বহুগুণে গুণান্বিত এবং অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার সাংবাদিক।
ভোলা দেশের প্রাচীনতম জাতীয় দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক,কলামিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মুনীরুজ্জামান’র মৃত্যুতে
নিত্যদিন নানাজন না ফেরার দেশে চলে যাচ্ছেন। এই করোনা আবহে এটাই সবচেয়ে অসহনীয় ঘটনা।
খন্দকার মুনীরুজ্জামান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী আপসহীন সাংবাদিক।
দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
প্রবীণ সাংবাদিক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য,এইউ এম ফখরুদ্দিন আর নেই।
এটিএন নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার আশিকুর রহমান অপুর বাবা মো. আব্দুর রবের মৃত্যুতে
দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
প্রবীণ সাংবাদিক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য,এইউ এম ফখরুদ্দিন আর নেই।
এটিএন নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার আশিকুর রহমান অপুর বাবা মো. আব্দুর রবের মৃত্যুতে